How does an Amplifier Work. কিভাবে একটি এমপ্লিফায়ার কাজ করে।
এমপ্লিফায়ার
এমপ্লিফায়ার শব্দের গেনকে এমপ্লিফাই বা জোরালো করে। প্রকৃতপক্ষে সিগন্যালের এমপ্লিচ্যূডকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু শব্দের এমপ্লিচ্যূড ( তরঙ্গের উচ্চতা )-কে বাড়ানোর সময়ে ভাল এমপ্লিফায়ারের সিগন্যালের গুন এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট একইরকম থাকে । যখন কোন উৎস থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করা হয়, যেমন মাইক্রোফোন, টেপ রেকর্ডারের হেড, তখন গৃহীত সিগন্যাল খুবই দুর্বল বা ক্ষীণ হয়। এমপ্লিফায়ার ক্ষীণ সিগন্যালকে জোরালো করে। প্রাথমিক অবস্থায় গৃহীত সিগন্যাল মাত্র কয়েক মিলিভোল্ট (1 volt = 1000 Volt ) হয় । এমপ্লিফায়ারের ইনপুটে যে সিগন্যাল প্রয়োগ করা হয়, এমপ্লিফায়ারের আউটপুট থেকে তার চেয়ে বর্ধিত এমপ্লিচ্যূডের সিগন্যাল পাওয়া যায়। ফটোগ্রাফিতে এনলার্জার যেমন ছবিকে বড় করতে পারে, এমপ্লিফায়ারও তেমনি সিগন্যালের এমপ্লিচ্যূডকে অনেক বড়ো করে দেয়। প্রধানতঃ অনেক ধরণের এমপ্লিফায়ার থাকলেও শব্দের এমপ্লিফায়ার বিশেষ গুরুত্ব পূর্ণ । এই এমপ্লিফায়ারকে প্রধান হিসেবে রেখে আমরা বিভিন্ন ধরনের এমপ্লিফায়ার সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আগেকার দিনে এমপ্লিফায়ার সার্কিটের প্রাণকেন্দ্রে ছিল ভাল্ব বা ভ্যাকুয়াম টিউব । এখনকার দিনে প্রধানতঃ ট্রানজিষ্টর দিয়ে এমপ্লিফায়ার সার্কিট গঠিত হয় । কিছু কিছু এমপ্লিফায়ার আজকাল ট্রানজিষ্টর দিয়ে তৈরী হয়, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমপ্লিফায়ারে আই.সি. ব্যবহৃত হয়।
এমপ্লিফায়ার এর শ্রেণী বিভাগ --
এমপ্লিফায়ারের কাজ ও ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে একে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়।
১) এমপ্লিফায়ার এর কারেন্ট, ভোল্টেজ বা পাওয়ার এমপ্লিফিকেশনের ওপর ভিত্তি করে।
২) কি ধরনের ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জে এমপ্লিফায়ার কাজ করে, যেমন---RF ( রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ) ভিডিও ফ্রিকোয়েন্সি বা AF ( অডিও ফ্রিকোয়েন্সি )
Radio frequency - 0.3 to 30 MHz
Video frequency -50 Hz to 5 MHz
Audio frequency - 16 Hz to 16 KHz
3) পরবর্তী ক্ষেত্রে এমপ্লিফায়ারটি কি ধরনের কাজ করবে তার ওপর নির্ভরশীল (mode of operation)
সাউন্ড সিস্টেমের বেশির ভাগ আউটপুট এমপ্লিফায়ারেই হয়, স্পিকারের সাথে কন্ডেন্সার কাপলিং অথবা ডাইরেক্ট কাপলিং এ । এই কারণের জন্য এমপ্লিফায়ারের আউটপুট ইম্পিডেন্স ( রেজিস্টেন্স ) যতটা সম্ভব কম রাখা হয়। এর থেকে একটা ভালো ফল পাওয়া যায়। যেমন যে কোন দুর্বল সিগন্যাল লাউড স্পিকারে প্রয়োগ করলেও সিগন্যাল কারেন্ট সর্বাপেক্ষা জোরালো স্পিকারের মধ্যে দিয়ে বয়ে যায়। মোটামুটিভাবে কার্যকারিতা অনুযায়ী এমপ্লিফায়ারকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়।
ক্লাস- এ ( Class A
এটি এক প্রকার ভোল্টেজ এমপ্লিফায়ার। ক্লাস 'এ' এমপ্লিফায়ারে প্রচুর তড়িৎ প্রবাহের জন্য বায়াস করা থাকে। সিগন্যাল স্ট্রেনথ ইনপুটে কম বা বেশি থাকলেও কারেন্ট খরচের ( কনসামশন ) গড় একই থাকে। যার জন্য ট্রানজিষ্টর দিয়ে গঠিত এই ক্লাস এ এমপ্লিফায়ার সব সময় কাজ করে। চট করে কাট অফ বা Saturated হয় না। এই এমপ্লিফায়ারের ফাইডেলিটি ( Fidelity ) খুব ভালো এবং এটি লো ডিস্টরশন যুক্ত।
ক্লাস- বি class B
প্রধানতঃ এই এমপ্লিফায়ারে ইনপুট সিগন্যালের পজেটিভ হাফ সাইকেলসে কালেক্টর কারেন্ট প্রবাহিত হয়। সাধারণতঃ ক্লাস--- বি এমপ্লিফায়ার আর,এফ ( রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ) স্টেজগুলোতে বেশি ব্যবহৃত হয়। এই এমপ্লিফায়ারে ডিস্টরশন ক্লাস-- এ এর তুলনায় বেশি থাকে। অনেক ট্রান্সফরমার কাপলোড অডিও এমপ্লিফায়ারে এই ক্লাস-- বি এমপ্লিফায়ার দেখা যায়। এর একটা ছোট্র অসুবিধা আছে, সেটা হলো এই ধরনের আউটপুটে সর্বদা কিছু কারেন্ট লস হতে থাকে। সাধারণতঃ 10 mA থেকে 20 mA ( কিছুটা কমবেশি হতেই পারে ) এর সব চেয়ে সুবিধা হলো এর কর্মদক্ষতা খুব বেশি। এই এমপ্লিফায়ারে ক্রশওভার ডিস্টরশনও দেখা যায়। যে কোন ধরনের ইনপুট সিগন্যালেই এই ক্রশওভার ডিস্টরশন উপস্থিত থাকে। এই প্রসঙ্গে আর একটা কথা না বললেই নয়, এর কারেন্ট ড্রেনেজ খুবই অস্থির সেইজন্য ভালো কাজ করতে হলে স্টেবিলাইজড পাওয়ার সাপ্লাই এর প্রয়োজন।
ক্লাস- সি (Class C
এই এমপ্লিফায়ার -এ ইনপুট সিগন্যালের খুব কম অংশ ( হাফ সাইকেলেসের কম ) সময়ে কালেক্টর কারেন্ট প্রবাহিত হয়। তারা একই সিগন্যালকে একই সঙ্গে এমপ্লিফাই করে এবং দুটো এমপ্লিফাই করা সিগন্যাল একই সঙ্গে একটা পথে আউটপুট হিসাবে পাওয়া যায়। সাধারণত এই ট্রানজিষ্টর দ্বয়ের বেসে সিগন্যাল প্রয়োগ করা হয় কিন্তু সিগন্যালের ফেজ বিপরীত (180 ডিগ্রি আউট অফ ফেজ ) থাকে। ঠিক এই কারনে একটা ট্রানজিষ্টরের কালেক্টর কারেন্ট যখন বাড়ে তখন অন্যটার কালেক্টর কারেন্ট কমে যায়। আউটপুটে কালেক্টর সিগন্যালের ফেজ বিপরীত মুখী হয়। এই আউটপুট সাধারণত ট্রান্সফরমার বা কনডেনসারের মাধ্যমে লাউড স্পিকারে প্রয়োগ করা হয়। বিশেষত এই ধরনের পুশ -পুল এমপ্লিফায়ার ছোট অন্য কোনো ট্রানজিষ্টর এমপ্লিফায়ারের মতো চোট করে কোন মেন্ সাপ্লাইয়ের লাইনের হাম ধরে না।
অনেক সময়ই পুশ-পুল এমপ্লিফায়ারে আউটপুট ট্রানজিস্টর দুটির একটি ( পি,এন,পি ) ও অপরটি (এন,পি,এন ) ব্যবহার করা হয়। এগুলোকে কমপ্লিমেন্টারি আউটপুট বা ক্যাসকোড এমপ্লিফায়ার স্টেজও বলা হয়।
এখানে ছবি, শব্দ, বিভিন্ন ক্যারিয়ার ফ্রিকোয়েন্সির এমপ্লিফায়ার সম্পর্কে সামান্য আলোচনা করা হচ্ছে।
অডিও প্রি এমপ্লিফায়ার ( Audio Pre-Amplifier ) --- এমপ্লিফায়ারের আগে এই প্রি এমপ্লিফায়ার থাকে, শব্দের সিগন্যাল এখানে অল্প জোরালো হওয়ার পর আউটপুটে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এই অংশে বাস্ ( Bass ), ট্রিবল ( Trible ) কন্ট্রোল থাকে।
অডিও এমপ্লিফায়ার ( Audio Amplifier ) -- এই এমপ্লিফায়ার স্পিকারের ঠিক আগে থাকে। এটি সাধারণতঃ শক্তিশালী এমপ্লিফায়ার হয়। তবে সমস্ত অডিও এমপ্লিফায়ারই মানুষের শ্রবণযোগ্য ফ্রিকোয়েন্সি 20 Hz থেকে 20,000 Hz কে ভালোভাবে জোরালো করতে পারে।
ভিডিও এমপ্লিফায়ার ( Video Amplifier ) --ভিডিও এমপ্লিফায়ার বা ছবির এমপ্লিফায়ার সাধারণত টি ভি /সি, টি, ভি, তে ব্যবহৃত হয়। প্রায় 30 Hz থেকে 5 MHz অবধি ফ্রিকোয়েন্সিকে জোরালো করার ক্ষমতা এর থাকে। সাধারণতঃ ক্লাস --এ এমপ্লিফায়ার এই অংশে ব্যবহৃত হয়।
আর এফ ( রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ) এমপ্লিফায়ার ( RF Amplifier ) --এই এমপ্লিফায়ার 30 KHz থেকে 30 MHz এর মধ্যবর্তি ন্যারো ব্যান্ডের ফ্রিকোয়েন্সিকে জোরালো করে। এই এমপ্লিফায়ার অনেকগুলো ফ্রিকোয়েন্সি থেকে একটা ফ্রিকোয়েন্সিকে নির্বাচন করে এবং অন্য ফ্রিকোয়েন্সিকে বাতিল করে দেয়। এর জন্য এখানে বিশেষভাবে টিউনড সার্কিট ব্যবহার করা হয়। সাধারণত কয়েল কনডেনসার দিয়ে টিউনড সার্কিট হয়।
আই এফ এমপ্লিফায়ার ( ইন্টার মিডিয়েট ফ্রিকোয়েন্সি ) ( IF Amplifier ) এই এমপ্লিফায়ার একটা নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে টিউন করা থাকে। গৃহীত আর,এফ, এবং লোকাল অসিলেটরে উৎপন্ন সিগন্যালের বিয়োগ ফল ( তফাৎ ) থেকে আই , এফ, পাওয়া যায়। বলা বহুল্য এই অংশও টিউনড হয়। সাধারণভাবে আই, এফ ট্রান্সফরমার (I,F,T.) দ্বারা টিউনিং সম্পন্ন করা হয়। রেডিও টিভিতে এই এমপ্লিফায়ার থাকে।
ট্রানজিষ্টারের বিভিন্ন কনফিগারেশন অনুযায়ী, ট্রানজিষ্টার গঠিত এমপ্লিফায়ারকে তিনভাগে ভাগ করা হয়। সিংগল স্টেজ এমপ্লিফায়ার তিন ধরনের হয় --
(১) কমন বেস এমপ্লিফায়ার (Common Base Amplifier)
(২) কমন এমিটার এমপ্লিফায়ার (Common Emitter Amplifier)
(৩) কমন কালেক্টর এমপ্লিফায়ার (Common Collector Amplifier)
কমন বেস (C.B) এমপ্লিফায়ার --
ছবিতে দেখানো ট্রানজিষ্টারের সাহায্যে এমপ্লিফায়ার গঠন করা হয়। এই সার্কিটে ইনপুট A,C সিগন্যাল এমিটার ও বেস সার্কিটের মধ্যে প্রয়োগ করা হয়। আর আউটপুট পাওয়া যায় কালেক্টর ও বেস সার্কিটের মধ্যে। উভয় ক্ষেত্রেই বেস কমন থাকার জন্য এই সিংগেল ট্রানজিষ্টার এমপ্লিফায়ারকে কমন বেস এমপ্লিফায়ার বলে। বিভিন্ন রকম ভোল্টেজ রেগুলেশন বা ভোল্টেজ ষ্টেবিলাইজেশনের কাজে এই ধরনের সার্কিট ব্যবহার হয়। এই সার্কিটের এমপ্লিফিকেশন গেন খুবই কম। সেইজন্য এমপ্লিফায়ার, প্রি এমপ্লিফায়ার প্রভৃতি সার্কিটে এর প্রয়োগ হয় না। ভোল্টেজ রেগুলেশনের জন্য বেসে স্থির ভোল্টেজ প্রয়োগ করা হয়। চিত্রে দুটি রেজিষ্টেন্স ( R 1 / R 2 ) দ্বারা এটি করা হয়েছে। এখন কালেক্টরে সাপ্লাই দিলে, এমিটর থেকে স্থির আউটপুট পাওয়া যাবে। ট্রানজিষ্টরের বেস থেকে নেগেটিভ ( R 2 ) এর জায়গায় কন্ট্রোল রেজিষ্টর ( ভেরিয়েবল রেজিষ্টর ) দিয়ে আউটপুট ভোল্টেজকে পরিবর্তন করা যায়। আবার জেনার ডায়োড ব্যবহার করে আউটপুটকে একদম স্থির করে রাখা সম্ভব হয়।
কমন এমিটর (C,E) এমপ্লিফায়ার --
এই ধরনের সার্কিটে এমিটর কমন থাকে আর বেস এমিটর এর মধ্যে ইনপুট সিগন্যাল প্রয়োগ করা হয়,আর আউটপুট পাওয়া যায় কালেক্টর ও এমিটারের মধ্যে থেকে। এই সার্কিটের বেসে সাপ্লাই থেকে হাই ভ্যালুর ( বেশি মানের ) রেজিষ্ট্যান্স ব্যবহার করে কম ভোল্টেজ প্রয়োগ করা হয়। ইনপুটে পজিটিভ হাফ সাইকেল এলে বেসের ফরোয়ার্ড বায়াস কারেন্ট ফ্লো বাড়ায়, নেগেটিভ এলে বিপরীত হয়। পজিটিভ হাফ সাইকেল ইনপুটের সময় সাপ্লাই থেকে কালেক্টর রেজিষ্টেন্সের দ্বারা বেশি ভোল্টেজ ড্রপ হয়। এর ফলে কালেক্টরে আউটপুট নেগেটিভ হাফ সাইকেলস পাওয়া যায়। আবার নেগেটিভ হাফ সাইকেলস ইনপুটে এলে আউটপুটে পজিটিভ হাফ সাইকেলস পাওয়া যায়। এই সিংগেল ষ্টেজ এমপ্লিফায়ারে সিগন্যালের ফেজ সিফট হয়ে যায়।
কমন কালেক্টর ( C.C) এমপ্লিফায়ার --
এই সিংগেল ষ্টেজ এমপ্লিফায়ারে কালেক্টর কমন থাকে। বেস ও কালেক্টরের মধ্যে সিগন্যাল প্রয়োগ করা হয়, এবং কালেক্টর ও এমিটরের মধ্যে থেকে আউটপুট পাওয়া যায়। এই সার্কিটের কালেক্টর সরাসরি পজিটিভ সাপ্লাই পায়। এই এমপ্লিফায়ারে ইনপুট ও আউটপুট একই ফেজে থাকে। কারেন্ট এমপ্লিফিকেশনেই এর ব্যবহার খুব বেশি।
কোন মন্তব্য নেই