Header Ads

Header ADS

What is Sound? The Fundamental Science Behind Sound, শব্দ কি? শব্দের পিছনে মৌলিক বিজ্ঞান।

 শব্দ




শব্দ একপ্রকার শক্তি। ইলেকট্রনিক যন্ত্রাদিতে শব্দ নিয়ে মাথা ঘামানোর অন্ত নেই। রেডিও, টিভি, এমপ্লিফায়ার, ষ্টিরিও, ক্যাসেট প্লেয়ার, রেকর্ডার, একুইলাইজার, ইকো চেম্বার, সিনথেসাইসার, প্রভৃতি হাজার যন্ত্রের উদ্ভাবনায় শব্দকে নিয়েই কারবার। মানুষের কান বিভিন্ন ধরনের শব্দ শুনতে পায়। সাধারণতঃ এই শব্দকে অডিও ফ্রিকোয়েন্সি বলা হয়। বস্তুর কম্পনের ফলে শব্দের উৎপত্তি হয়। কম্পনের ফলে প্রতি সেকেন্ডে যদি পূর্ণ তরঙ্গের সৃষ্টি হয় তাকেই কম্পাঙ্ক  বা ফ্রিকোয়েন্সি বলা হয়। কম্পাঙ্কের একক হলো সাইকেলস প্রতি সেকেন্ডে (C/S) একে হার্জ (Hz) ও বলা হয়। 

1000 Hz = 1 KHz
1000 KHz = 1 MHz

শব্দ নিয়ে আলোচনা শুরু করার আগে আমরা শব্দ সম্পর্কে অল্প কিছু জেনে নেই।  
১) শব্দ একপ্রকার শক্তি, যেমন আলো ও তাপ একপ্রকার শক্তি। শক্তি ধ্বংস বা সৃষ্টি করা যায় না। কেবল এর অবস্থার পরিবর্তন হয় অর্থাৎ একটা শক্তি থেকে অপর শক্তিতে রুপান্তর ঘটে। 
২) কোন বস্তুর বা উৎসের কম্পনের ফলে শব্দের উৎপত্তি হয়। যেমন তবলা, গীটার। মানুষের কান এই শব্দ গ্রহণ করতে পারে। 
৩) শব্দের কম্পাঙ্ককে (ফ্রিকোয়েন্সি) সাইকেলস প্রতি সেকেন্ড একক দ্বারা নির্দেশ করা হয়। 
৪) কোন বায়ুশুন্য স্থান এর মধ্যে দিয়ে শব্দ যেতে পারে না। মাধ্যম বলতে বোঝায় বাতাস, জল ইত্যাদি। 
৫) মানুষের কান যে ফ্রিকোয়েন্সি শুনতে সক্ষম তাকে অডিও ফ্রিকোয়েন্সি বলে সাধারণত 20 Hz থেকে 20000 Hz
অবধি শব্দ মানুষের কান শুনতে পায়। 20 Hz এর কম অথবা 20000 Hz এর বেশি মানুষের কান অনুভব করতে পারে না। 
৬) 20000 Hz এর ওপরের বেশি কম্পাঙ্ককে আলট্রা সোনিক সাউন্ড বলে। মানুষের কান শুনতে না পেলেও কুকুর ও অন্যান্য কিছু পশুপাখি এই শব্দের সংবেদন পায়। অনেকে এই কম্পাঙ্ককে হাই ফ্রিকোয়েন্সিও বলে থাকেন। 
৭) শব্দের রেশ মানুষের মস্তিষ্কে 1/10 সেকেন্ড অবধি থাকে। এর চেয়ে দ্রুত কিছু ঘটলে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে বুঝে নিতে পারে না। 
৮) বাতাসে শব্দের গতিবেগ ( বাতাস একটি মাধ্যম ) 1120 ft/sec or 330 mtr/sec.
৯) সুন্দর এবং সঠিক কম্পনের ফলে সুরেলা শব্দ তৈরি হয়। এই শব্দ শ্রুতি মধুর এবং সুর যুক্ত। 
১০) বেঠিক বা বহু কম্পনের ফলে শ্রুতিকটু নয়েজ এর সৃষ্টি হয়। যেমন বাজারের কোলাহল। 
১১) প্রায় 500 Hz থেকে সুরু করে 5000 Hz অবধি কম্পাঙ্কের শব্দ মানুষের কান খুব ভালোভাবে, পরিষ্কার ভাবে এবং স্পষ্টভাবে শুনতে পায়। 
১২) সাধারণ ভাবে দেখা যায় পুরুষ মানুষের গলায় স্বরের গড় কম্পাঙ্ক হলো 120 Hz.
১৩) মহিলাদের গলায় স্বর সামান্য তীক্ষ্ণ শব্দ আমরা শুনতে পাই তা মোটামুটি 250 Hz 270 Hz এর মধ্যে। 
 আমরা একটু আগেই শব্দের  বৈচিত্র সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা সামান্য শব্দ সম্পর্কে আলোচনা করে আরও কিছু বিশেষত্ব সুর, স্বর, তীক্ষ্ণতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানব। কোন বস্তু বা পদার্থের  কম্পনের ফলেই শব্দের উৎপত্তি ঘটে। বাতাস মাধ্যম হিসাবে কাজ করে এবং আমাদের কান বাতাসের কম্পন থেকে নার্ভে সংবেদন এর মাধ্যমে মস্তিষ্কে শব্দের অনুভতি জাগায়। প্রায় সব সময়েই কিছু না কিছু শব্দ কানে এসে পৌঁছাবে। কিছু কিছু শব্দ আমাদের কাছে শ্রুতিমধুর মনে হয় বা শুনতে মিষ্টি লাগে। যেমন বাজনার শব্দ, গীটার, জাজ, হারমোনিয়াম ইত্যাদির শব্দ। এগুলোকে সুর যুক্ত শব্দ বলা যায়। অপর দিকে কিছু শব্দ হট্রগোল কলকারখানার শব্দ টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ ইত্যাদি শ্রুতিকটু লাগে এগুলোই হলো নয়েজ। আমরা আগেই জেনেছি যে বস্তুর কম্পনের ফলেই শব্দের উৎপত্তি হয়। সেটা সহজে বোঝা যায়, যখন একটা গীটারের কোন তারকে টেনে বাজালে সেটা কাঁপতে থাকে। আবার হাত দিয়ে স্পর্শ করলেই তার কাঁপুনি থেমে যায় আর বন্ধ হয়। কাঁসর ঘন্টাকে হাতুড়ি মেরে বাজালেও ঠিক সে রকমই সেটা কাঁপছে বোঝা যায়, আর হাত দিয়ে স্পর্শ করলে সেটা থেমে যায় তবে কোন বস্তু সেকেন্ডে ২০ বারের কম কাঁপলে বা ২০,০০০ বারের বেশী কাঁপলে তার শব্দ আমরা শুনতে পাই না। 
এবার কিন্ত আর একটা কথা মনে রাখতে হবে, বায়ুশূণ্য স্হানের মধ্যে দিয়ে শব্দ যেতে পারে না শব্দের যাওয়ার জন্য স্হিতিস্হাপক জড় মাধ্যমের প্রয়োজন হয়। বাতাস একটা ভালো মাধ্যম। এছাড়াও জল বা ধাতব পদার্থ,  লোহা, তামা  ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে শব্দ যেতে পারে । অর্থাৎ শব্দ বায়বীয় ,তরল ,কঠিন পদার্থের মধ্যে দিয়ে যেতে পারে। যেহেতু আগেই বলেছি বায়ুশূন্য স্হানের মধ্যে দিয়ে শব্দ যেতে পারে না তাই সূর্যের মধ্যে প্রতি মূহূর্তে যে বিপুল বিস্ফরণ হয় তা আমরা জানতে পারি না কারণ পৃথিবীর উপরিভাগে মাত্র ২০০ মাইল অবধি বাতাসের অবস্থান ,এর পরের অংশ বায়ুশূন্য। 

শব্দের তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য :--- 
আমরা একটু আগেই আলোচনা করেছি শব্দ তরঙ্গ বিভিন্ন অবস্থায় ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যম দিয়ে যেতে পারে। একটা পূর্ণ তরঙ্গকে 1 সাইকেল ধরা হয়। সাধারণত: 360 ডিগ্রী কোন গঠিত হলে তবেই 1 সাইকেল গঠিত হয়। এখন আমরা শব্দ তরঙ্গ সম্পর্কে আরও জানবো। 

কম্পাঙ্ক ( Frequency ) ---
এক সেকেন্ডের মধ্যে যতগুলো পূর্ণ তরঙ্গ তৈরি হয় তাকেই তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বলে। একে সাইকেল প্রতি সেকেন্ডে দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যদি দেখা যায় এক সেকেন্ডে 30 টা পূর্ণ তরঙ্গ প্রস্তুত হচ্ছে তাহলে কম্পাঙ্ক বা ফ্রিকোয়েন্সি হবে 30 C/S
এখনকার দিনে C/S কে হার্জ দ্বারা বোঝানো হয়। 

বিস্তার ( Amplitude ) ---
তরঙ্গের পাদদেশ থেকে তরঙ্গের সবচেয়ে উচ্চ্ অবস্থানকে ( Peak ) তরঙ্গের Amplitude বলা হয়। 
বেগ ( Velocity ) ---
যে কোন মাধ্যমে শব্দ 1 সেকেন্ডে যত দূর অতিক্রম করে সেই দূরত্বকে নির্দিষ্ট মাধ্যমের ক্ষেত্রে শব্দের বেগ বলা হবে। বাতাস একটা মাধ্যম। বাতাসে শব্দের গতিবেগ 332 মিটার বা 1120 ফুট। 

তীক্ষ্ণতা ( Pitch ) ---
শব্দ কত তীক্ষ্ণ হবে বা চড়া হবে তা পুরোপুরি নির্ভর করে কম্পাঙ্কের উপর। শব্দ তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বেশি হলে শব্দ তীক্ষ্ণ হয় বা চড়া হয়। কম্পাঙ্ক কম হলে শব্দ মোটা হয় বা গম্ভীর হয়। 

গুন্ বা জাতি ( Quality ) ---
দরজা বন্ধ থাকলেও বাইরে থেকে কেউ ডাকলে আমরা তার গলার শব্দ শুনে চিনে নিতে পারি। আবার তবলা, হারমোনিয়াম, সেতার, গীটার, প্রতিটাই আলাদা ভাবে শুনে তা থেকে কোনটি কিসের শব্দ যন্ত্রগুলোকে না দেখেই বলে দেওয়া যায়। অর্থাৎ প্রতিটা শব্দের কিছু না কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে যে বৈশিষ্ট্যর জন্য আমরা এরকম ভাবে অধিক উৎসের শব্দকে চিনে নিতে পারি তাকেই শব্দের গুন্ বা কোয়ালিটি বলে। 

সুর ( Tone ) ---
কোন উৎস থেকে উৎপন্ন একটি মাত্র কম্পাঙ্ক যুক্ত শব্দকে সুর বলা যায়। সুর শলাকা থেকে উৎপন্ন হয় নির্দিষ্ট একটা কম্পাঙ্ক যুক্ত শব্দ, তাই একে সুর বলা যায়। হারমোনিয়ামে নির্দিষ্ট কোন রিডের জন্য উৎপন্ন শব্দকে সুর বলা যায়। মনে রাখতে হবে সুর একটা বিশুদ্ধ্ব শব্দ। 

স্বর ( Note ) ---
অনেকগুলো সুরের সমন্বয়ে তৈরি হয় স্বর। দেখা যায় বাদ্যযন্ত্ৰ থেকে নির্গত শব্দ বেশির ভাগই স্বর। কিন্ত স্বরের মধ্যে থাকা সুরকে উপসুর বলা হয়।

শ্রুতিমধুর শব্দ ( Musical Sound ) ---
যে সব শব্দ আমাদের ভাল লাগে যেমন বৃষ্টিপাতের শব্দ, তবলা বা হারমোনিয়াম বা বাদ্যযন্ত্রের শব্দ তাকেই আমরা শ্রুতিমধুর বা সুর যুক্ত শব্দ বলে থাকি। 

শ্রুতিকটু শব্দ ( Noise ) ---
যে সকল শব্দ আমাদের কাছে বিরক্তিকর তাকেই নয়েজ বলা হয়। সাধারণত কোলাহল ,হৈ চৈ , হট্টগোল ,বাজারের গোলমাল প্রভৃতিকে নয়েজ বলা হয়। যে সমস্ত শব্দ শুনতে মোটেই ভাল লাগে না তাকেই নয়েজ বলে সাধারণতঃ কর্কশ শব্দ আমাদের ভাল লাগে না।কিন্ত দেখা যায় ভিন্ন ভিন্ন মানুষের রুচিবোধ ভিন্ন ,একই শব্দ অপরের শ্রুতিমধুর মনে হতে পারে। তাই নিয়মিত কম্পনের জন্য , পর্যাবৃত্ত দোলনের ফলে উৎপাদিত শব্দকে সুরযুক্ত শব্দ বলা যায়। 

শব্দের তীব্রতা ( Loudness ) ---
শব্দ যত জোরে হয় , শব্দের তীব্রতা  ( Volume ) তত বেশি হয়। আমাদের কানে খুব কম সময়ের মধ্যে অনেক বেশী শক্তি প্রবেশ করলে শব্দের তীব্রতা বেশি বলে মনে হয়। তবে শব্দের তীব্রতা কয়েকটা বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। ১) উৎসের আকার , ২) স্রোতা ও উৎসের মধ্যের দূরত্ব, ৩) উৎসের কম্পন বিস্তার , ৪) মাধ্যমের গতি , ৫) মাধ্যমের ঘনত্ব ৬) অনুনাদী গতির উপস্হিতি। 

প্রতিধ্বনি ( Echo ) ---
বড়  হল ঘরের এক দিকে দাড়িয়ে জোরে কিছু বললে , বলার পরে আবার সেই কথা শুনতে পাওয়া যায়। শব্দ দূরের দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসে বলেই এরকম হয়। শব্দের এই প্রতিফলনকেই বলে প্রতিধ্বনি। কিন্ত্ত খুব ছোট ঘরে এই ধরনের প্রতিফলন সম্ভব হয় না সাধারণত দেখা যায় 1/10 সেকেন্ডের চেয়ে দ্রুত কিছু ঘটে গেলে আমাদের মস্তিস্ক সঠিকভাবে তা নিতে পারে না। যখন আমরা কিছু শুনি তার রেশ 1/10 সেকেন্ডে অবধি আমাদের মস্তিষ্কে থেকে যায়। শব্দের গতিবেগ বাতাসে 1120 ফুট / সেকেন্ড, তাহলে 1/10 সেকেন্ডে 112 ফুট। অন্তত কমপক্ষে শ্রোতা ও উৎসের 112 ফুট হলে তবেই প্রতিধ্বনি শোনা যায়। যদি কোন মানুষ, হল ঘরের এক প্রান্তে হাততালি দেয় তাহলে প্রতিধ্বনি শোনার জন্য তার থেকে অন্ততঃ 56 ফুট দুরে অপর প্রান্তের দেওয়াল থাকতে হবে। শব্দের যাওয়া ও আসা 
( 56 x 2 = 112 ফুট ) সময় যেন 1/10 সেকেন্ডে বা তার বেশি হয়। 

অনুরণন ( Vibration ) ---
বদ্ধ খালি ঘরে কথা বললে একটা গমগমে ভাব থাকে। সামান্যক্ষন যেমন শব্দের রেশ থেকে যায়। 
একেই অনুরণন বা ভাইব্রেশন বলে। ---            

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.